teaching 24

মা-বাবার ১০ ভুল-Teaching24

মা-বাবার ১০ ভুল


Romantic baby teaching24bd.blogspot.com



বাচ্চা ভয়ংকর কাচ্চা ভয়ংকর‍! অনেকের কাছে বাচ্চাকাচ্চা মানেই ঝামেলার বিষয়। মা-বাবার কাছে কিন্তু বিষয়টি একেবারেই উল্টো। সন্তান যেমনই হোক—দুষ্টু কি শান্ত—প্রত্যেক মা-বাবার কাছেই তাঁর সন্তান অনেক প্রিয়। তাই সন্তানের অনেক বিষয়ই নজর এড়িয়ে যায় মা-বাবার। আবার নিজের অজান্তেই অনেক প্রচলিত ভুলও হয় তাঁদের। এমন ১০টি ভুল তুলে ধরা হয়েছে ইয়াহুর প্যারেন্টিং সাইটে।

১. অতিরিক্ত আদর করা
মা-বাবা সন্তানকে ভালোবাসবেন, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু অতিরিক্ত ভালোবাসা সন্তানের ক্ষতির কারণও হয়। সন্তানের সব কথা মানা অথবা সব জিদ পূরণ করলে ভবিষ্যতে তাকে আয়ত্তে আনা কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায়। তাই সন্তানের কিছু ইচ্ছা বা শখ এড়িয়ে যাওয়াই ভালো।

২. আমার সন্তানই সঠিক
সন্তান সম্পর্কে কোনো নেতিবাচক কথা শুনতে চান না মা-বাবা। তাঁরা মনে করেন, তাঁদের সন্তান কোনো ভুল করতে পারে না। এতে সন্তানও হয়তো ভাবতে পারে, তারা যে কাজ করেছে, সেটি মা-বাবার কাছে কোনো ভুল নয়। কিন্তু মনে রাখতে হবে, আপনার সন্তান ছোট মানুষ, সে ভুল করতেই পারে। তাই এসব ভুল এড়িয়ে না গিয়ে সন্তানকে বোঝানোর চেষ্টা করুন—কোনটা ভুল আর কোনটা ঠিক।

৩. শিশুদের মাঝে নিজের ছায়া দেখা
অনেক সময় মা-বাবা তাঁদের সন্তানের জীবন নিজের মতো করে পরিচালনা করতে চান। সন্তানকে দিয়ে নিজেদের শখ পূরণ করতে চান। কিন্তু আপনার যে বিষয়ে আগ্রহ বা শখ ছিল, তা আপনার সন্তানের নাও থাকতে পারে। তাই তার ওপর জোর করে নিজের শখ বা আগ্রহ চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবেন না।

৪. সন্তানের সামনে নিজেকে সঠিক প্রমাণের চেষ্টা
অনেক মা-বাবা চান, সন্তান তাঁর সব কাজের জন্য প্রশংসা করুক। সব সময় বাবার একটি কাজ বা মায়ের একটি সিদ্ধান্ত যে সন্তানের ভালো লাগতেই হবে, তা কিন্তু নয়। কোনো কোনো কাজে সন্তান বিরক্তও হতে পারে। কারণ, তাদেরও আলাদা মন ও ভাবনা গড়ে ওঠে। আবার বাবা ও মা দুজনই যে সব সময় সন্তানের সামনে সঠিক কাজটি করবেন, তা-ও নয়। কাজেই ভুল করলে ভুল স্বীকার করাই ভালো।

৫. প্রতিযোগিতামূলক মনমানসিকতা
সন্তানকে ইঁদুর-দৌড়ে ছেড়ে দেওয়া যাবে না। প্রতিযোগিতামূলক দুনিয়ায় অনেক কিছু করতে হয়, নানা বিষয়েই চৌকস হতে হয়। কিন্তু তাতে সন্তানকে প্রতিযোগিতার মধ্যে ফেলে দেওয়া চলবে না। তাদের পরিশ্রম করতে হবে, এটা ঠিক; কিন্তু সন্তানকে বলা যাবে না, ‘যেকোনো মূল্যে’ প্রথম স্থানের অধিকারী হতে হবে। সন্তানকে অন্য কারো সঙ্গে তুলনা করাও ঠিক নয়।

৬. শৈশব হারিয়ে ফেলা
শিশুর কাছ থেকে তাদের শৈশব কেড়ে নেওয়া ঠিক নয়। বাবা বা মায়েরা মাঝেমধ্যে সন্তানকে এমন পড়ালেখার চাপের মধ্যে রাখেন যে বাচ্চারা অনেক সময় খেলাধুলা বা বন্ধুদের সঙ্গে মেলামেশার সুযোগই পায় না। এতে করে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ওই সন্তানের শৈশব। শুধু পাঠ্যবইয়ের মধ্যে আবদ্ধ না রেখে বিদ্যালয়ের বাইরের বইপত্রও সন্তানকে পড়তে দেওয়া উচিত। তাতে বাচ্চাদের শৈশব অনেক বর্ণিল হয়ে ওঠে।

৭. আমার মতো আমার সন্তান হবে
আমি যেমন, আমার সন্তানও হবে তেমন। আমার মতো বুদ্ধিমান হবে। সবকিছুতে সে সেরা হবে। সন্তান যখন গর্ভে থাকে, তখন থেকেই মা-বাবারা এমন চিন্তা করেন। কিন্তু বাস্তবে সন্তান আপনার মতো নাও হতে পারে। তাই আগেভাগে কোনো কিছু কল্পনা না করাই ভালো। আপনার সন্তানকে তার ইচ্ছামতো কাজ করতে দিন। আপনার শৈশব ও কৈশোর আর আপনার সন্তানের শৈশব-কৈশোর এক নয়। কাজেই আপনার সন্তান আপনার চেয়ে ভিন্ন হবে, সেটাই স্বাভাবিক।

৮. যা বলি তা করি না
সন্তানকে নীতিশিক্ষা দিতে চান সব মা-বাবাই। বাচ্চারা সেটা শোনেও। কিন্তু এই নীতিশিক্ষার সঙ্গে যখন আপনার কাজকর্ম মেলে না, তখন সন্তানও ব্যাপারটা বুঝে নেয় যে কথা আর কাজে এক না হলেও সমস্যা নেই। অতএব, আপনি যদি ভালো উপদেশ দেন সেটা নিজেও অনুসরণ করুন, যাতে সন্তান আপনাদের অনুসরণ করতে পারে এবং ভালো মানুষ হতে পারে।

৯. অন্য মা-বাবা এবং সন্তানের ভুল ধরা
পৃথিবীর কেউই ভুল-ত্রুটির ঊর্ধ্বে নয়। দোষে-গুণে মিলিয়েই মানুষ। কিন্তু অন্যের ভুল নিয়ে বিচার-বিশ্লেষণ করা, সন্তানের সামনে অন্য বাচ্চার মা-বাবার ত্রুটি বের করা ঠিক নয়। মানুষ অনেক সময় নিজেদের অক্ষমতাকে লুকানোর জন্য অন্যের ভুল ধরে। এ ধরনের প্রবণতা সন্তানের মধ্যেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

১০. অবজ্ঞার চোখে দেখা
একটি পরীক্ষার ফল বা পুরস্কারের ট্রফির চেয়ে আপনার সন্তান অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। সে যদি কোনো কিছুতে জিততে না পারে, তাহলে তাকে অবজ্ঞার চোখে দেখবেন না। তাকে জোর করে ইচ্ছার বিরুদ্ধে কোনো কাজ করতে বাধ্য করবেন না। তাকে অন্য কাজে উৎসাহ দিন। আজ হয়তো আপনার সন্তান সামান্য প্রতিযোগিতায় সাফল্য পায়নি, তাতে কী! ভবিষ্যতে দেখবেন, আপনাকেই তারা বড় জয় এনে দেবে। সুতরাং উৎসাহ দিন, আস্থা হারাবেন না।

Thank You So Much
Next Tips

No comments

Theme images by loops7. Powered by Blogger.